নিজস্ব প্রতিবেদক :
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগের নেতা ও জেলা বাস-কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেও আজও ভুক্তভোগীরা বিচার পাননি। তিনি টাঙ্গাইল -2 আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির বড় ভাই। গোলাম কিবরিয়া বড়মনি ও ছোট মনি টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল গফুরের ছেলে। সাবেক দুনীর্তিবাজ স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের আর্শিবাদপুষ্ট হওয়ায় একাধিক ধর্ষন মামলার আসামী বড়মনিরের আজও কোন বিচার হয়নি। এখনও জেলাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বড় মনিরের কোন বিচার না হওয়ায়।
2023 সালের 6 এপ্রিল রাতে ভুক্তভোগী কিশোরী টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে।সে কিশোরী তিনি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
মামলা সূত্র জানা গেছে, ওই কলেজছাত্রীর বাবা-মা মারা গেছেন। এর ফলে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এ কারণে কিশোরী টাঙ্গাইল এর আওয়ামী লীগের নেতা ও জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব ও টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের কাছে সহযোগিতা চায়। এতে বড় মনির তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বাসায় ডেকে নেয়। পরে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। কিশোরী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মোবাইলে ছবি তুলে রাখে। পরে তুলে রাখা ছবি দেখিয়ে বারবার ওই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বড় মনির। এতে তিনি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হন। পরে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয় বড় মনির। কিশোরী সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় একই বছরের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি তার শ্বশুরবাড়ি আদালত পাড়ায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এরপরও কিশোরী বাচ্চা নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় ওই বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর বড় মনির স্ত্রী তাকে মারধর করেন। এতে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত ৩টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেন। এরপর থেকে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হতো। টাঙ্গাইল সদর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে আইনগত কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করেননি বলে আভিযোগ রয়েছে। সাবেক দুনীর্তিবাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালই ছিল বড় মনিরের মুল শক্তি। যার ভুক্তভোগী কেউ আজও বিচার পাননি।
এদিকে গত বছরের প্রথম দিকে ঢাকায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করায় তুরাগ থানায় মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী আরেক কলেজছাত্রী।
রাতে জরুরি সেবার ‘৯৯৯’ নম্বর থেকে কল পেয়ে পুলিশ রাজধানীর তুরাগ থানায় প্রিয়াংকা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে। তাকে জোর করে ওই বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। পুলিশের ভাষ্য,মতে বড় মনির ঘটনাস্থল থেকে তখন পালিয়ে যায়। গত 5 আগষ্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বড় মনির দেশ ত্যাগ করে।