নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরও দেশের জনগনকে নেতিবাচক বিষয়গুলো না দেখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সাথে বাংলাদেশ দল মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
বিশ্বকাপ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আজ দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তাসকিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিতেছি। সঙ্ড়ত কারণেই ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি নেতিবাচকও আছে। সবার মত আমরাও হতাশ। আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে কখনওই আমাদের বড় সাফল্য ছিল না। আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। আমরা শুধুমাত্র নেতিবাচক দিকগুলোর দিকে তাকাতে পারি না। স্বাভাবিকভাবে সবাই হতাশ। কিন্তু আমাদের উপর আস্থা রাখতে হবে। আমরা ভাল খেলে আপনাদের জয় উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
গ্রুপ পর্বে ৪ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জয় পায় বাংলাদেশ। তবে সুপার এইটে তিন ম্যাচেই হেরেছে। সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশের আত্মসমর্পণে ব্যথিত হয়েছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমিরা।
সেমিফাইনালে খেলতে হলে আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১১৬ রানের টার্গেট ১২ দশমিক ১ ওভারে স্পর্শ করতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু রান তাড়া করার জন্য কোন চেষ্টাই করেনি টাইগার ব্যাটাররা।
৪৭ দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশ ব্যাটারদের পারফরমেন্স ছিলো খুবই খারাপ। বিশ্বকাপের আগে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ব্যর্থতা অব্যাহত ছিলো তাদের। তবে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মুখ রক্ষা করেছেন বোলাররা। ২০০৭ সালের প্রথম বিশ্বকাপের পর এবার বাংলাদেশের সুপার এইটে খেলার সুযোগের পেছনে বড় ভূমিকা রাখেন দলের বোলাররা।
দশ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ব্যাটারদের এত দীর্ঘ সময়ের জন্য অফ ফর্ম দেখেননি তাসকিন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আপনি যদি ব্যাটিং নিয়ে কথা বলেন। তবে এটি থুবই খারাপ ছিলো। কিন্তু একই সাথে আপনি যদি পরিসংখ্যানের দিকে তাকান, আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রে এবার সব দলেরই ব্যাটিং পারফরমেন্স খারাপ হয়েছে। বোলাররা অনেক সুবিধা পেয়েছে। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজেই ভালো ব্যাটিং উইকেট পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার দশ বছরে বাংলাদেশ ব্যাটারদের এত দীর্ঘ অফ ফর্ম দেখিনি। আশা করি এই সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে।’
ইনজুরির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পারেননি তাসকিন। তবে দলের বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিতে বিশ্বকাপ দিয়ে মাঠে ফিরেন তিনি। কন্ডিশন পক্ষে থাকায় ভালো করেছেন তিনি।
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অর্জন পেসার তানজিম হাসান সাকিব এবং লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ১৪ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষ উইকেট শিকারিদের তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয়স্থানে আছেন রিশাদ। তানজিম নেন ১২টি উইকেট।
তাসকিন বলেন, ‘তানজিম এবং রিশাদ অসাধারন পারফর্ম করেছে। টুর্নামেন্টের উইকেট শিকারের দিক দিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে ছিলো তারা। যা বাংলাদেশের ভবিষ্যত তারকা বলে প্রমান করে। এমন পারফরমেন্সে বুঝা যায়, আমাদের সামর্থ্য আছে।’
তাসকিন বলেন, টুর্নামেন্টে বাজে ফলাফলে ভক্তদের মতো ব্যথিত হয়েছে খেলোয়াড়রাও। তিনি আরও জানান, সেমিফাইনাল নিশ্চিতের জন্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২ দশমিক ১ ওভারে রান তাড়া করা উচিত ছিলো তাদের।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরও অনেক ভালো করতে পারতাম। আমরা সবাই শেষ ম্যাচটি নিয়ে বেশ হতাশ। ১২ ওভারের মধ্যে আমরা জয়ের জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু যখন আমরা বুঝতে পেরেছি এটি সম্ভব নয়, তখন আমরা ম্যাচ জয়ের জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পারিনি।’