নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সেতু ভবনে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতায় সরাসরি জড়িত ২ ব্যক্তিসহ ৯ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
এদের মধ্যে ৭ জন বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে এই নাশকতায় ইন্ধন যুগিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. হারুন অর রশিদ।
তিনি আজ বুধবার রাজধানীর মিন্টুরোডস্থ ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনে অর্থের বিনিময়ে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী, মহাখালীর সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ এবং বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সরাসরি জড়িতরা হচ্ছেÑ মো: রাকিব (২২) ও মো. জজ মিয়া। এছাড়া এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইন্ধনদাতারা হচ্ছে- ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, সানিয়াত ভুলু (বরকত উল্লাহ ভুলুর ছেলে), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন খোকন ওরফে কাইল্লা খোকন, কৃষক দলের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন, ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান দয়াল, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন ও জামায়াতে ইসলামীর ভাটারা থানার আমীর রেজাউল করিম।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, তারা সরকার উৎখাত করতে চেয়েছিল । কোটা আন্দোলন ঘিরে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করেছে। আমরা সবার নাম পরিচয় পেয়েছি। তারা কীভাবে কার মাধ্যমে গান পাউডার ও অস্ত্র এনেছে বের করা হবে। আন্দোলনের নামে ঢাকা শহরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করেছে। ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। হামলার রসদ সরবরাহ করার তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ব্যবহার করে পুলিশকে হত্যা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ডাটা সেন্টার, বিটিভি, আমাদের গর্বের মেট্রোরেলে হামলা করেছে। সব জায়গায় গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী।
ডিবি প্রধান বলেন, মহাখালীর সেতু ভবনে জামায়াত, শিবির ও বিএনপির কিছু নেতা টাকা পয়সা দিয়ে সাততলা বস্তি এবং কুড়িল বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সংগ্রহ করেছে। এরপর মহাখালীতে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল শুরু করে। পরবর্তীতে তারা সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়।
হারুন অর রশিদ বলেন, এসব ঘটনার পর তাদের হাতে সিসিটিভি ফুটেজে এসেছে। সেখানে যারা আগুন লাগিয়েছে এবং মালামাল লুটপাট করেছে, তাদের এমন অনেকের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা পুলিশ মারার জন্য ও আগুন দেওয়ার জন্য টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে এসব সহিংসতা চালানো হয় বলে আটককৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আটককৃতদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি। এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কারা ইন্ধন দিয়েছে, কারা অর্থ দিয়েছে সব জেনেছি। পরে এসব তথ্য বিস্তারিত জানাবো।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আটককৃতদের মোবাইল ফোনে নাশকতার নির্দেশনার মেসেজ পাওয়া গেছে। আমাদের কাছে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে আটক করা হচ্ছে।